Elementor #11257


বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমে দ্বীন, মুফাক্কিরে ইসলাম মুসলিহে উম্মাত ফকীহে মিল্লাত হযরত মাওলানা মুফতী আব্দুর রহমান (রহ.) গত ১০ নভেম্বর ২০১৫ ইং তারিখে পরপারের পথে পাড়ি জমিয়েছেন। হযরত মুফতী সাহেবের বার্ধক্য এবং লাগাতার অসুস্থতা সত্ত্বেও তাঁর দেশে এবং বিদেশে সফরের ধারা বন্ধ ছিল না। কিন্তু মৃত্যুর কয়েক মাস পূর্বে থেকে তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন চিকিৎসার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তিনি ৯৬ বছর বয়সে আপন রবের সাথে মিলিত হয়েছেন।


انا لله وانا الیه راجعون

দারুল উলূম দেওবন্দের সাথে আমার সম্পৃক্ততার পর থেকে দারুল উলূমের নিসবতে প্রতি বছর আমি সপ্তাহ-১০ দিনের জন্য বাংলাদেশ সফর করি। প্রতিটি সফরে এই অধমের ওপর তাঁর অনুগ্রহ ছিল বর্ণনাতীত। মুফতী সাহেব (রহ.) ১৯২২ সালে চট্টগ্রামের ইমামনগর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন, যা তৎকালীন সময়ে অবিভক্ত ভারতের আসাম প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রাথমিক শিক্ষা নিজ দেশে অর্জন করার পর তিনি ১৯৫০ সালে দারুল উলূম দেওবন্দে ভর্তি হন এবং দেওবন্দে জামাতে দাওরায়ে হাদীস থেকে ইফতা পর্যন্ত অত্যন্ত সুনাম এবং দক্ষতার সাথে পড়ালেখা সমাপ্ত করেন। তিনি শায়খুল ইসলাম মাওলানা সৈয়দ হুসাইন আহমদ মাদানী (রহ.)-এর প্রথমসারির ছাত্র ছিলেন। পড়ালেখা সমাপনান্তে শিক্ষকতার মহান পবিত্র পেশা দিয়ে তাঁর কর্মজগতে প্রবেশ। এরপর নিজেই বসুন্ধরায় মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী নামে একটি উচ্চতর গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠানের গোড়াপত্তন করেন। শাহ সৈয়দ মাওলানা আবরারুল হক হারদূয়ী (রহ.)-এর সাথে তাঁর আধ্যাত্মিক সম্পর্ক ছিল। মুফতী সাহেব হারদূয়ী হযরতের খেলাফত লাভেও ধন্য হন। পুরো দেশে মুফতী সাহেবের অগণিত ছাত্র-ভক্ত ইলমে দ্বীনের খেদমতে নিয়োজিত আছেন। হযরতের প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহ তাঁর খোলাফা ও ছাত্ররা তাঁর জন্য কেয়ামত পর্যন্ত সদকায়ে জারিয়া হিসেবে অবশিষ্ট থাকবে। মুফতী সাহেবের মৃত্যুতে বাংলাদেশ একজন দরদি মুরবŸি শীর্ষস্থানীয় আল্লাহওয়ালাকে হারাল, যা কোনোভাবেই পূরণীয় নয়। আল্লাহ তা’আলা আপন অনুগ্রহে হযরতের যাবতীয় খেদমতকে কবুল করুন এবং তাঁকে জান্নাতের উচ্চাসনে সমাসীন করুন। দারুল উলূমে মুফতী সাহেবের মৃত্যুর খবর পৌঁছার সাথে সাথে ঈসালে সাওয়াব এবং দু’আয়ে মাগফিরাতের বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়।