সবচেয়ে কম ও বেশি বয়সের সাহাবা এবং তাঁদের বর্ণিত হাদীসের হুকুম
প্রশ্ন : রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ইন্তেকালের সময় সাহাবী হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা.)-এর বয়স ছিল মাত্র ১৩ (তের) বছর। অথচ কোরআন শরীফের তাফসীর সম্পর্কীয় অধিকাংশ হাদীস হযরত ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত। এত অল্প বয়সে তিনি কিভাবে তাফসীর সম্পর্কীয় এত অধিকসংখ্যক হাদীস বয়ান করলেন?
হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবাগণের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী কে ছিলেন? এবং তিনি মোট কতটি হাদীস বর্ণনা করেছেন? আর হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবাগণের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বয়সের কে ছিলেন? এবং মোট কয়টি হাদীস বর্ণনা করেছেন?
বয়স কম বা বেশি হওয়ার দরুন স্মরণশক্তি বা বোধশক্তির ত্রুটি অথবা অন্য কোনো ত্রুটির কারণে তাঁদের বর্ণিত হাদীসসমূহ সহীহ বা নির্ভরযোগ্য ও আমলযোগ্য হওয়ার ব্যাপারে কোনো প্রভাব পড়তে পারে কি না?
উত্তর : সাধারণত মানুষের মনে দুই ধরনের প্রশ্ন উদ্ভাবিত হয়। প্রথমত, আক্বায়েদ বা আমলের সাথে সম্পৃক্ত। দ্বিতীয়ত, অনর্থক প্রশ্ন, যার সাথে ঈমান ও আমলের কোনো সম্পর্ক নেই। এ ধরনের অনর্থক প্রশ্ন করা ও তার উত্তর দেওয়া প্রশ্নকারী ও উত্তরদাতা উভয়েরই সময় নষ্ট করা। তা সত্ত্বেও আপনার প্রশ্নের উত্তর নিম্নরূপ :
ক. রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ইবনে আব্বাসের জন্য দু’আ করেছিলেন : اللھم علمه الکتاب والحکمة অন্য বর্ণনায় اللھم فقھه فی الدین وعلمه التاویل আরেক বর্ণনায় আছে اللھم علمه الحکمة وتاویل الکتاب
খ. ইবনে আব্বাস (রা.) বুদ্ধির বয়স থেকেই নবী পরিবারে লালিত-পালিত হয়েছেন এবং রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর সার্বক্ষণিক সঙ্গ লাভ করেছেন। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ইন্তেকালের পর বড় বড় সাহাবায়ে কেরামের সঙ্গ লাভের মাধ্যমে অনেক হাদীস শ্রবণ করেছেন এবং শিখেছেন। (১৫/৫৯/৫৮৯২)
ل .
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর যুগে ছোট ছেলে বুদ্ধির বয়সের পর হাদীস শ্রবণ করলে তা শুদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য বলে গণ্য। ইবনে আব্বাস (রা.) যেহেতু বুদ্ধি বয়সের ছিলেন, তাই তাঁর বর্ণনা নির্ভরযোগ্য হওয়ার ব্যাপারে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই।
হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবাগণের মধ্যে সবচেয়ে কম বয়সী ছিলেন হযরত মাহমুদ বিন রবী (রা.)। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ইন্তেকালের সময় তাঁর বয়স ছিল ৫ বছর। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে তাঁর বর্ণিত হাদীস মাত্র একটি।
আর সবচেয়ে বেশি বয়সী ছিলেন সালমান ফারসী (রা.)। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর ইন্তেকালের সময় তাঁর বয়স ছিল ২২৭ বছর; মতান্তরে ৩২৭। তাঁর বর্ণিত হাদীসের সংখ্যা হলো ৬০টি।
হযরত সালমান ফারসী (রা.)-এর বয়স বেশি হওয়ার কারণে স্মরণশক্তি হ্রাস পাওয়া বা ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার প্রমাণ না থাকায় তাঁর বর্ণিত হাদীসসমূহ শুদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য হওয়ার ব্যাপারে কোনো প্রভাব পড়বে না।