মহিলা মাদ্রাসা সম্পর্কে হারদূয়ী হযরত (রহ.)-এর মতামত
প্রশ্ন : গত ১৯৯৫ ইংরেজি সালের ‘আদর্শ নারী’ নভেম্বর সংখ্যায় একটি কলাম ছাপানো হয়েছে, যাতে হযরত মাওলানা শাহ আবরারুল হক সাহের দাঃ বাঃ বর্তমান মহিলা মাদ্রাসাকে জায়েয বলে ফতওয়া দিয়েছেন। অথচ আমরা এত দিন নাজায়েয তথা হারাম জেনে আসছি। আর মূল্যবান বক্তব্য যা আপনার থেকে শুনেছি তাতেও আমরা নাজায়েয বা হারাম বলে বুঝে নিয়েছি। তাই এখন আমার প্রশ্ন হলো যে তিনি কিভাবে এটাকে জায়েয ফতওয়া দিয়েছেন? এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে আগ্রহী হয়ে হযরতের খিদমতে প্রশ্নপত্র পাঠালাম।
উত্তর : মহিলাদের জন্য দ্বীনের জরুরি মাসায়েল ও আহকামের শিক্ষা অর্জন করা ফরয। তবে পুরুষের তুলনায় মহিলাদের দায়িত্ব ও কর্মক্ষেত্র সীমিত হওয়ার কারণে তাদের শিক্ষার পরিমাণও সীমিত। এ পরিমাণ শিক্ষা নারী জাতি অপ্রাপ্ত বয়স্কাবস্থায় যেকোনো পন্থায় অর্জন করতে পারে। বালেগা বা মুরাহেকা হওয়ার সাথে সাথে মহিলাদের ওপর পর্দা এবং নিজ ঘরে অবস্থান করার বিধান অর্পিত হয়ে যায় এবং মহিলাবিষয়ক জরুরি বা শরয়ী জরুরত ছাড়া ঘর হতে বের হওয়ার অনুমতি শরীয়তে নেই। এমতাবস্থায় দ্বীনি শিক্ষার নামে মহিলাদের উপরোক্ত শরয়ী বিধান লঙ্ঘন করে মহিলা মাদ্রাসায় অবস্থান করে হোক বা যাতায়াত করে দ্বীনি শিক্ষা অর্জন করার অনুমতি শরীয়তে নেই। তাই প্রচলিত মহিলা মাদ্রাসার কোনো অস্তিত্ব ইসলামের স্বর্ণযুগ হতে এ পর্যন্ত পাওয়া যায় না। বরং বালেগা বা মুরাহেকা হবার পর বিয়ের পূর্বে প্রয়োজন হলে মহিলা নিজের মা-বাবা বা মাহরামের অধীনে আর বিয়ের পর স্বামীর অধীনে দ্বীনি শিক্ষা লাভ করতে পারবে। এর জন্য মহিলা মাদ্রাসা, বিশেষ করে আবাসিক মহিলা মাদ্রাসার প্রয়োজন নেই। উপরন্তু অত্যন্ত অপারগতা ছাড়া বেগানা হতে শিক্ষা অর্জন করা এবং মহিলাদের আওয়াজ (যা অনেক উলামায়ে কেরামের মতে সতরের অন্তর্ভুক্ত) পরপুরুষ পর্যন্ত পৌঁছানো অত্যন্ত গর্হিত কাজ, যা কোনো অবস্থায় জায়েয হতে পারে না।
বি:দ্র:, হযরত মাওলানা শাহ্ আবরারুল হক সাহেব (রহ.) বালেগা মহিলা মাদ্রাসা, বিশেষ করে আবাসিক মহিলা মাদ্রাসাকে জায়েয ফতওয়া দিয়েছেন বলে আমাদের জানা নেই। আর মাসিক আদর্শ নারী কোনো ফতওয়ার কিতাবও নয়। (৯/৩৭৫/২৬৫৫)