মনগড়া পদ্ধতিতে কোরআনের শিক্ষাদান
প্রশ্ন :
১. একজন প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক কোনো উস্তাদের নিকট কোরআন-হাদীস শিক্ষা না করে নিজস্ব আবিষ্কৃত পদ্ধতিতে কোরআন-হাদীসের শিক্ষা প্রদান করে চলেছেন। দুই-তিন স্থানে তাঁর শিক্ষা কার্যক্রম চালু আছে, যা সম্পূর্ণ তাঁর নিজের আবিষ্কৃত।
২. তিনি বিশেষত হাই স্কুলগামী বা উঠতি বয়সের যুবতীদেরকেই শিক্ষা দিয়ে থাকেন।
৩. উল্লেখ্য, মেয়েদেরকে শর্ত দেওয়া হয় যে মাস্টারের অনুমতি ব্যতীত বিবাহ বসতে পারবে না। ফলে কিছু মেয়ের অভিভাবকগণ বিবাহের চাপ দিলে মেয়েরা বাড়ি ছেড়ে মাস্টারের বাড়ি চলে যায়। বড় বোনের পূর্বে ছোট বোনের বিবাহ দিয়ে দেওয়ার কথাও নাকি ছাত্রীদের দু-একজন তাদের অভিভাবকদের জানিয়ে দিয়েছে।
৪. মোনাজাতের সময় যুবতী মেয়েদের উচ্চ স্বরে কান্না শুনে পাশের বাড়ির লোকজনকে ছুটে আসতেও দেখা গেছে। যারা শিক্ষাদানে বা আলোচনায় অংশ নিতে যায়, এরা বেশির ভাগই অবিবাহিত।
৫. তা ছাড়া দেশবরেণ্য মুফাস্সিরগণের পেশকৃত কোরআনের তাফসীর নাকি তদ্বীয় দলপতিদের বুঝে আসে না। তাদের মন্তব্য হলো, কোরআনের তাফসীরের এ প্রচলিত পদ্ধতির দ্বারা সমস্যা সমাধানের এমন কোনো সুরাহা দেওয়া হয় না, যা বাস্তবধর্মী।
উত্তর : সর্বজনবিদিত সত্য কথা যে কোনো শাস্ত্র বা জ্ঞান-বিজ্ঞান অর্জন করার জন্য অভিজ্ঞ জ্ঞানী ও শাস্ত্রবিদের শিষ্যত্ব গ্রহণ করতে হয়, এ পন্থা অবলম্বন ব্যতীত শাস্ত্রবিদ হওয়ার দাবি করা বড়ই অপরাধ। কোরআন ও হাদীস শরীফের ব্যাপার তো আরো কঠিন। রীতিমতো শিক্ষাগ্রহণ ছাড়া কোরআন-হাদীসের সঠিক অর্থ ও মর্ম উপলব্ধি করা সম্ভব নয়। এর জন্য প্রাসঙ্গিক আরো বহু জ্ঞানের সমন্বয় জরুরি। সুতরাং পরিপূর্ণ আলেমে দ্বীন না হয়ে কোরআন-হাদীসের শিক্ষা দেওয়ার অনুমতি নেই এবং নিজ যুক্তিতে কোরআন শিক্ষা দেওয়া শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
মহিলাদের পর্দা করা ফরয। ফরয বিধান লঙ্ঘন করে শিক্ষা দেওয়া সম্পূর্ণ অবৈধ। মাহরাম ব্যতীত পর্দার সহিত শিক্ষাও শঙ্কামুক্ত নয়। বিবাহের ক্ষেত্রে মাস্টার বা শিক্ষকের অনুমতির কোনো প্রয়োজন নেই। পরের মেয়েকে নিজের আয়ত্তাধীন করার পরিকল্পনা অত্যন্ত গর্হিত ও ঘৃণিত কাজ। এ ক্ষেত্রে গার্ডিয়ানের অবহেলাও বড় দায়ী। (৩/২২২/৫৪৬)