প্রবৃত্তি নয়, যেকোনো একটি মাযহাব মানা জরুরি
প্রশ্ন : বিভিন্ন মসজিদের নামায পড়ার সময় দেখা যায় কিছুসংখ্যক লোক নামায পড়ার সময় রুকু থেকে ওঠার পর নিয়্যাত বাধার মতো কান পর্যন্ত আবার হাত উঠান, তারপর সিজদায় যান। আলাপ-আলোচনা করে জানা গেল, এটা নাকি অন্য মাযহাব এবং এর পক্ষে যুক্তি পাওয়া যায়। কোনো লোক যদি তাঁর গোটা জীবনে যেকোনো এক মাযহাব মেনে চলেন, তবে তিনি তাঁর দেশের অন্যান্য লোকের মাযহাবের সাথে মিল না রাখলেও চলবে। এখন আমার প্রশ্ন হলো, এ কথাটি কতটুকু যৌক্তিক? তা ছাড়া তাঁরা জামা’আতে নামায পড়ার সময়ও সূরা-ক্বেরাত মনে মনে শব্দ করে পড়ে থাকেন। প্রশ্ন হলো, তাঁদের নামাযের হুকুম কী?
উত্তর : প্রসিদ্ধ চার মাযহাবের যেকোনো একটির ওপর আমল করা আবশ্যকীয় এবং সর্বক্ষেত্রে সেই একই মাযহাবের অনুসরণ অপরিহার্য। সুবিধামতো বিভিন্ন মাযহাবের ওপর আমল করার কোনো অবকাশ নেই। তাই প্রত্যেক দেশে যে মাযহাবের প্রচলন হয়, সে স্থানে উক্ত মাযহাবই অনুসরণীয়। অন্যথায় সর্বক্ষেত্রে নিজ মাযহাব মতে আমল করা সম্ভব হবে না । কেননা যে মাযহাবের প্রচলন না থাকে তার চর্চাও তেমন হয় না। বাংলাদেশের সর্বত্র যেহেতু হানাফী মাযহাব প্রচলিত, তাই এখানে হানাফী মাযহাবই মেনে চলতে হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে এক শ্রেণীর লোক বের হয়েছে, যারা মানুষকে নতুন নতুন পদ্ধতির নামায-রোযার কথা বলে সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। তারা কথায় কথায় হাদীসের উদ্ধৃতি টানতে খুবই পটু। অথচ কোরআন-হাদীসের সঠিক ব্যাখ্যা থেকে তারা অনেক দূরে। মানুষকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যে মাযহাবের অনুসারী বলেও দাবি করে থাকে, যা নিছক ধোঁকামাত্র। প্রকৃতপক্ষে তারা চার মাযহাবের কোনো একটিকেও অনুসরণ করে না। বরং শুধুমাত্র নিজেদের বিচারে সুবিধাজনক পন্থা অবলম্বন করে থাকে। তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করা বা তাদের কথা কর্ণপাত করা থেকে বিরত থাকাই হচ্ছে বিভ্রান্তি এড়ানোর সহজ পথ। (১০/৪৪৯/৩১৩৫)