তাকবীরসমূহে الله শব্দের মাদের পরিমাণ
প্রশ্ন : নামাযের তাকবীরাতে ইন্তেকালিয়াসমূহে الله শব্দের লাম কতটুকু দীর্ঘ করার অনুমতি আছে? ‘আত্তারগীব ওয়াত তারহীবে’র টীকাকার শাফেয়ী মাযহাবের নামাযের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন,ومد التکبیر متی یصل الی الرکن المنتقل الیه আমাদের হানাফী মাযহাবের নামাযের আলোচনায় নির্ভরযোগ্য কিতাবغنیةالمتملی তে এ ব্যাপারে প্রণিধানযোগ্য ফায়সালা এটাই দিয়েছেন যা নি¤œরূপ :
واما اللام فمدہ صواب ‘আহসানুল ফাতাওয়া’য় এক আলিফের বেশি হওয়াকে মাকরূহ লিখেছেন, যা তিনি আল্লামা শামী (রহ.)-এর رد المحتار হতে ‘হিলিয়াহ’ নামক কিতাবের বরাতে উদ্ধৃত করেছেন। এখানে আরো একটি প্রশ্ন থাকতে পারে।
১. আল্লাহ শব্দের বৈশিষ্ট্যাবলির মধ্যে এটাও কি একটি, যে তার মধ্যে ইলমে কিরাতের নীতি-বিধান প্রযোজ্য হবে না? তাই ফিকহের কোনো বিশেষ নীতিও বাধ্যতামূলক নয়?
২. ইলমে কিরাতের মাস’আলা সব কি নামাযের কিরাতেও প্রয়োগযোগ্য?
৩. যেহেতু এ তাকবীরগুলো দীর্ঘায়িত না করলে নামাযে মুক্তাদীদের উল্টাপাল্টা হবেই, তাইالضرورة تبیح المحظورات নীতি-বিধান এখানে কি আসতে পারে না?
৪. فمدہ صواب দ্বারা গুনিয়াতুল মুতামাল্লীর গ্রন্থকার কোনো মদ উদ্দেশ্য করলেন তার সপক্ষে দলিল কী?
৫. যেহেতু অর্থকেন্দ্রিক গোলমাল বা আভিধানিক কোনো সমস্যাই লামের মধ্যে দৃষ্টিগোচর হচ্ছে না তাই দীর্ঘকরণে ক্ষতিইবা কী? যদি এসব কিছু থেকেই থাকে তাহলে ‘আততারগীব ওয়াত তারহীব’-এর টীকাকার কিভাবে অনুমতি প্রদান করলেন? যদি বলা হয় যে অন্য মাযহাবের কথা আমাদের জন্য দলিল নয়, আমি বলব এ মাস’আলাটি যে الله শব্দের মদ নিয়ে কথা এটা কি বাস্তবেই ফিকহের গÐিবদ্ধ, নাকি অন্য কোনো শাস্ত্রভিত্তিক?
উত্তর : ইলমে কিরাত ও তাজবীদের বিধিবিধান ও নীতিমালা ফিকাহবিদ ও তাজবীদ বিশারদগণের সর্বসম্মতিক্রমে শুধুমাত্র কোরআনে কারীমের বেলায় প্রযোজ্য নয় বরং কোরআনে কারীমের সাথে সাথে আযান, ইকামত ও তাকবীরের বেলায়ও প্রযোজ্য। আর বিজ্ঞ কারীগণের নির্ভরযোগ্য মতানুযায়ী মদ্দে তাবায়ীকে (মদ্দে তবয়ী) এক আলিফের ঊর্ধ্বে টানা মাকরূহ। তাই সমস্ত কারীর মতে তাকবীরাতে ইন্তেকালিয়ার মধ্যেও الله শব্দের লামকে এক আলিফের চেয়ে বেশি দীর্ঘ করা মাকরূহ। এক আলিফের বেশি দীর্ঘ না করলে মুক্তাদীদের মাঝে উল্টাপাল্টা হওয়ার দাবি অবান্তর। এক আলিফ পর্যন্ত টেনে পড়ার ওপর মশ্ক করে নামায পড়ালে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে না।
غنیة المتملی কিতাবে উল্লিখিত واما اللام فمدہ صواب এখানে মদ্দে তাবয়ী বোঝানো হয়েছে, আর الله শব্দের বৈশিষ্ট্যাবলির মধ্যে আপনার বর্ণিত বৈশিষ্ট্য কোনো বিজ্ঞ ফকীহ বিজ্ঞ কারী সাহেব থেকে বা নির্ভরযোগ্য কোনো কিতাবে উল্লেখ নেই, বরং এর বিপরীতটার উল্লেখ পাওয়া যায় বিধায় الله শব্দকেও ইলমে কিরাতের নীতিমালার আওতায় উচ্চারণ করতে হবে। আর উল্লিখিত মাস’আলায় এমন কোনো জরুরত পরিলক্ষিত হচ্ছে না, যার কারণে الضرورة تبیح المحظورات এর নীতি-বিধান এখানে প্রযোজ্য করতে হবে। অনুরূপভাবে হানাফী মাযহাবের অনুসারীদের জন্য হানাফী মাযহাবের ওপর আমল সম্ভব হওয়া পর্যন্ত অন্য মাযহাবের দিকে যাওয়ার কোনো অনুমতি নেই। তাই এ মাস’আলাতেও শাফেয়ী মাযহাবের মতামত নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। (৮/১৪৪/১৯৯৭)
Tag:তাকবীর