জামিয়াতুল আবরার বাংলাদেশ
বসুন্ধরা রিভারভিউ আবাসিক প্রকল্প
কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।
জামিয়াতুল আবরার বাংলাদেশ
বসুন্ধরা রিভারভিউ আবাসিক প্রকল্প কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।
সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
হযরত ফকীহুল মিল্লাত মুফতী আব্দুর রহমান সাহেব (রহ.) অর্ধশতাব্দীকাল চট্টগ্রাম আল-জামিয়া আল-ইসলামিয়া, পটিয়াতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন শেষে ১৯৯১ সালে রাজধানী ঢাকায় আগমন করেন। প্রতিষ্ঠা করেন দেশের সর্বপ্রথম উচ্চতর ধর্মীয় শিক্ষার অনন্য প্রতিষ্ঠান “মারকাযুল ফিকরিল ইসলামী বাংলাদেশ”।
১৯৯১ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ২৫ বছর ঢাকায় অবস্থান করে দেশব্যাপী ইসলাম ও মানবতার কল্যাণে ব্যাপক খিদমাত আঞ্জাম দেন। এ সময়ে ঢাকাসহ সারা দেশে অসংখ্য মসজিদ-মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন।
তাঁর এ সকল ধর্মীয় কাজ অবলোকন করে পরম আস্থাশীল হয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান মহোদয় তাঁর নতুন আবাসিক প্রকল্প বসুন্ধরা রিভারভিউতে খুবই সুন্দর ও মনোরম একটি জায়গা মসজিদ ও মাদরাসার জন্য বরাদ্দকরতঃ হযরত ফকীহুল মিল্লাত (রহ.)-কে তা গ্রহণ করার অনুরোধ করেন। হযরত (রহ.) বিষয়টি তাঁর পীর ও মুর্শিদ হযরতওয়ালা শাহ আবরারুল হক (রহ.)-এর মতামত ও সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দেন। ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে হযরত মাওলানা শাহ আবরারুল হক (রহ.) বাংলাদেশ সফরে তাশরিফ আনেন। এটিই ছিল তাঁর বাংলাদেশে সর্বশেষ সফর।
বাংলাদেশে অবস্থানকালে হযরতওয়ালা হারদূয়ী (রহ.)-এর সামনে বিষয়টি উপস্থাপন করা হলে তিনি নিজ উদ্যোগে ওই জায়গাটি পরিদর্শনকরতঃ দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য জায়গাটি তাঁর খুবই পছন্দ হয়েছে বলে মন্তব্য করেন এবং ওই দিনই তিনি সেখানে মসজিদ-মাদরাসার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
অতঃপর হযরত ফকীহুল মিল্লাত (রহ.)-কে নির্মাণকাজ আরম্ভ করার নির্দেশ প্রদান করেন। এ সময়ে হযরত ফকীহুল মিল্লাত (রহ.) প্রতিষ্ঠানটির নাম “জামিয়াতুল আবরার” রাখার আবেদন করলে হযরতওয়ালা হারদূয়ী (রহ.) এতে সদয় সম্মতি প্রদান করেন।
হযরতওয়ালা হারদূয়ী (রহ.)-এর ইন্তেকালের এক সপ্তাহ পূর্বে হযরত ফকীহুল মিল্লাত (রহ.) স্বীয় মুর্শিদের সাক্ষাৎলাভ ও জামিয়াতুল আবরারের বিষয়ে পরামর্শ করার জন্য হারদূয়ী যান। হযরতওয়ালা হারদূয়ী (রহ.) এ বিষয়ে বিস্তারিত দিকনির্দেশনাসহ নিম্নোক্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করেন।
- জামিয়াতুল আবরারে তাসহীহে কোরআন ও হিফজুল কোরআনের ব্যবস্থা রাখা হবে।
- মীযান জামা’আত থেকে কিতাব বিভাগ চালু করা হবে।
- নিম্নে বর্ণিত বিশেষ গুণাবলিসম্পন্ন উস্তাদ নিয়োগ দেওয়া হবে।
- বিশুদ্ধ কোরআন তিলাওয়াতের অধিকারী হওয়া।
- সুন্নাতের পরিপূর্ণ অনুসারী হওয়া।
- কোরআন-হাদীসের খিদমতের আগ্রহে আস্থাশীল হওয়া তথা বেতনকে মূল উদ্দেশ্যে পরিণত না করা।
- শরয়ী পর্দার যথাযথ পাবন্দ হওয়া।
- জামিয়ার আশপাশে বিশুদ্ধভাবে কোরআন শিক্ষা ও পড়ার পরিবেশ গড়ে তোলা।
এই আলোচনার এক সপ্তাহ পর হযরতওয়ালা হারদূয়ী (রহ.) ইন্তেকাল করেন। আল্লাহ তা’আলা তাঁকে জান্নাতে সুউচ্চ মকাম দান করুন।
বিভিন্ন প্রতিকূলতায় তৎক্ষণাৎ জামিয়াতুল আবরারের নির্মাণকাজ ও শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হয়নি। বেশ কিছুদিন পর হযরতওয়ালা হারদূয়ী (রহ.)-এর খাস দু’আ ও আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে ১৪/০৪/১৪২৭ হিজরী মোতাবেক ১৩/০৪/২০০৬ ইংরেজি রোজ শনিবার আনুষ্ঠানিকভাবে জামিয়ার নির্মাণকাজ আরম্ভ করা হয়। একই বছর, অর্থাৎ ১৪২৭ হিজরী সনের মাহে রমাজান থেকে হিফজুল কোরআন বিভাগ ও শাওয়াল মাস থেকে কিতাব বিভাগ শুরু করা হয়। প্রথম বছর মীযান জামা’আত থেকে মিশকাত জামা’আত পর্যন্ত নিয়মতান্ত্রিকভাবে সকল জামা’আতে ছাত্র ভর্তি হয়। দ্বিতীয় বছর দাওরায়ে হাদীস খোলা হয়। খুবই অল্প সময়ের মধ্যে জামিয়ার নির্মাণ ও শিক্ষা খাতে ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়। ২৬৬৪০ বর্গফুটের চারতলাবিশিষ্ট একটি ছাত্রাবাস, ১৪৪৪০ বর্গফুটের একটি হিফজুল কোরআন, মেহমানখানা ও খানেকাহ ভবন, ৩০৬০০ বর্গফুটের তিনতলাবিশিষ্ট মসজিদের নির্মাণকাজ এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ৪৫০০০ বর্গফুটের পাঁচতলাবিশিষ্ট একটি শিক্ষা ভবনের কাজ চলমান। মীযান জামা’আত থেকে দাওরা হাদীস পর্যন্ত কিতাব বিভাগ হিফজুল কোরআন বিভাগ, হাফেজ ছাত্রদের বিশেষ বিভাগ ও উচ্চতর কিরাত বিভাগে হাজারের অধিক আবাসিক ছাত্র শিক্ষারত রয়েছে। শিক্ষক-কর্মচারী আছেন ৫০ জনের মতো। ছাত্রদের তিন বেলা খাবার, প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও যাবতীয় শিক্ষা উপকরণ জামিয়ার গোরাবা ফান্ড থেকে সরবরাহ করা হয়।
অল্প সময়ে অত্র জামিয়ার ব্যাপক তরক্কী একমাত্র আল্লাহ তা’আলার বিশেষ দয়া ও হযরতওয়ালা হারদূয়ী (রহ.)-এর কারামত বলতে হবে। কেননা সরাসরি হযরতওয়ালার নির্দেশে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশে এটি অন্যতম প্রতিষ্ঠান। আল্লাহ তা’আলা এটিকে হযরতওয়ালার সদকায়ে জারিয়া হিসেবে কবুল করুন। আমীন।
জামিয়ার শিক্ষাবিষয়ক বিভাগসমূহ
হিফজুল কোরআন বিভাগ
এই বিভাগে দক্ষ ও অভিজ্ঞ আলেম হাফেজগণের মাধ্যমে তাজবীদ সহকারে কোরআনে কারীমের হেফজের সুব্যবস্থা রয়েছে।
কিতাব বিভাগ
আকাবীরে দেওবন্দের মতাদর্শ ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে তাঁদেরই প্রণীত যুগোপযোগী নিসাবে তা’লীমের মাধ্যমে সুন্নাত মোতাবেক পরিবেশে মীযান জামা’আত থেকে দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত পাঠদান করা হয়।
উচ্চতর কিরাত বিভাগ
অভিজ্ঞ কারী সাহেবদের মাধ্যমে দাওরায়ে হাদীস উত্তীর্ণ ছাত্রদের জন্য উচ্চতর কিরাত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। একই সাথে সকল ছাত্রের তাসহীহে কোরআনের প্রশিক্ষণও প্রদান করা হয় ।
তারবিয়ত ও সুন্নাতের প্রশিক্ষণ
ছাত্রদের আমল-আখলাক এবং সুন্নাত মোতাবেক যিন্দেগী গঠনের লক্ষ্যে দৈনন্দিন করণীয় সকল কাজে সুন্নাতের আমলী মশক ও সাপ্তাহিক ইসলাহী বয়ানের ব্যবস্থা রয়েছে।
জামিয়ার গ্রন্থাগার
দেশি-বিদেশি দুষ্প্রাপ্য অমূল্য কিতাবাদির বিরাট সমাহার নিয়ে জামিয়ার একটি ঐতিহ্যবাহী গ্রন্থাগার রয়েছে। অত্র গ্রন্থাগার থেকে ছাত্র-শিক্ষকগণকে জরুরি কিতাবাদি সরবরাহ এবং অধ্যায়নের সুযোগ প্রদান করা হয়।
জামিয়ার ব্যয় নির্বাহ পদ্ধতি
এই প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনসাধারণের আন্তরিক দু’আ ও তাদের স্বেচ্ছাপ্রদত্ত সার্বিক সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
(মুহতামিম)
বসুন্ধরা রিভারভিউ আবাসিক প্রকল্প
কেরানীগঞ্জ, ঢাকা।
মোবাইল : (০০৮৮) ০১৮১৯-২৫৮৪৪১
: (০০৮৮) ০১৮১৯-৪৬৯৬৬৭
মোবাইল (অফিস) : (০০৮৮) ০১৮২০৫২১৩৮৩
Jamiatul Abrar Bangladesh
A/C No: 1531220000252
Al-Arafah Islami Bank Ltd.
Bashundhara Branch.
Dhaka.
