গণতন্ত্র ইসলাম সমর্থন করে না
প্রশ্ন : আমরা সবাই ভালোভাবে অবগত আছি যে আজ বিশ্বব্যাপী বিশেষ করে পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে গণতন্ত্রের ছত্রছায়ায় ইসলামবিরোধী যাবতীয় কার্যকলাপ রাষ্ট্রীয়ভাবে বৈধতার স্থান পেয়ে যাচ্ছে। আজ ইউরোপ-আমেরিকায় এই গণতন্ত্রের স্লোগান দিয়েই নারী-পুরুষের সমতা, লিভ টুগেদার, সমকামিতা ইত্যাদির মতো অত্যন্ত জঘন্য মানবতাবিধ্বংসী অপরাধগুলো শুধুমাত্র বৈধতার সনদই পাচ্ছে না বরং তা রাষ্ট্রীয়ভাবে সার্বিক পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছে। রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তিরাও গর্বের সাথে এতে অংশ নিচ্ছে এবং বক্তৃতা ও মিডিয়া ব্যবহার করে এর প্রতি উৎসাহ দিচ্ছে। আর এসব কিছুই হচ্ছে গণতন্ত্র তথা সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের দোহাই দিয়ে। কিন্তু কিছুদিন আগে একটি মাসিক পত্রিকায় ‘গণতন্ত্র, নির্বাচন ও ইসলাম’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ দেখতে পেলাম। উক্ত নিবন্ধে লেখক লেখেছেন যে, “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নাকি সর্বপ্রথম পৃথিবীকে গণতন্ত্র শিখিয়েছেন, অর্থাৎ তিনিই ছিলেন গণতন্ত্রের রূপকার তথা প্রতিষ্ঠাতা। তিনি তাঁর নবুওয়াতী জীবনের সকল সময়েই জনমতকে গুরুত্ব দিতেন যথাযথভাবে।” অথচ আল্লাহ তা’আলা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় পবিত্র কোরআন শরীফে ঘোষণা করেছেন যে ‘আর যদি আপনি পৃথিবীর অধিকাংশ লোকের কথা মেনে নেন তাহলে তারা আপনাকে আল্লাহর সঠিক পথ থেকে গোমরাহ করে দেবে” খোলাফায়ে রাশেদীন তথা ইসলামের সোনালি যুগের চার খলীফাই নাকি গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হয়েছিলেন। গণতন্ত্রের বর্তমান প্রেক্ষাপট এবং লেখকের এই দাবিগুলোর সাথে মোটেই একমত হতে পারছি না। তাই হুজুরের নিকট জানতে চাচ্ছি যে, গণতন্ত্রের সঠিক সংজ্ঞা কী? ইসলামের দৃষ্টিতে এটা বৈধ কি না? “রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়সাল্লাম তাঁর নবুওয়াতী জীবনের সকল সময়েই জনমতকে গুরুত্ব দিতেন যথাযথভাবে।” এ কথাটি কতটুকু সত্য? ইসলামের চার খলীফা গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই কি নির্বাচিত হয়েছিলেন? অনেকে আবার গণতন্ত্র মতবাদকে দুই ভাগে ভাগ করে থাকেন। অর্থাৎ বর্তমান প্রচলিত গণতন্ত্র এবং ইসলামী গণতন্ত্র। বাস্তবে কি তাই?
উত্তর : বর্তমান বিশ্বে যত তন্ত্র আছে, তার সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। যারা প্রচলিত তন্ত্রের সাথে ইসলামকে টেনে নিতে চায়, তারা হয়তো তন্ত্র বোঝে না অথবা ইসলাম বোঝে না। কারণ প্রচলিত গণতন্ত্র মানুষের আবিষ্কৃত মতবাদ, জনসাধারণ পরিচালিত শাসনব্যবস্থার নাম, যা জনগণ দ্বারা জনগণের স্বার্থে প্রতিষ্ঠিত হয়। যেখানে রয়েছে প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ, মহিলা, শিক্ষিত, অশিক্ষিত, ভাল-মন্দ চরিত্রহীন, সন্ত্রাসীসহ সর্বপ্রকার মানুষের ভোটের সমান অধিকার। এককথায় গণতন্ত্রের মৌলিক ভিত্তিই হলো, জনমত ও জনগণই ক্ষমতার উৎসÑএ মতবাদের ওপর। এ ধরনের মতবাদের সাথে কোরআন ও হাদীস তথা শরীয়তের কোনো সম্পর্ক নেই। (৮/৭৪৯/২২৪১)
Tag:গণতন্ত্র