কোরআনের চ্যালেঞ্জ এবং আলট্রাস্নোর মাধ্যমে গর্ভে সন্তান নির্ণয়
প্রশ্ন : কোরআন শরীফে সূরা লোকমানের শেষ আয়াতে আছে, “নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছেই কিয়ামতের জ্ঞান রয়েছে, তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং গর্ভাশয়ে যা থাকে তিনি তা জানেন, কেউ জানে না আগামীকাল সে কী উপার্র্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন দেশে সে মৃত্যুবরণ করবে, আল্লাহ সর্বজ্ঞ সর্ব বিষয়ে খবরদার।” এই আয়াতে বলা হয়েছে, গর্ভাশয়ে যা থাকে তা একমাত্র আল্লাহ পাকই জানেন। অর্থাৎ আল্লাহ পাক ছাড়া অন্য কেউ জানে না। কিন্তু বর্তমান যুগে আমরা জানি যে কোনো মেয়েলোক গর্ভবতী হলে ডাক্তাররা আলট্রাস্নো পরীক্ষার মাধ্যমে তার গর্ভের সন্তান ছেলে নাকি মেয়ে, তা বলে দিতে পারে। সুতরাং উপরোক্ত আয়াতের সঠিক তাফসীর বর্ণনা করে বিষয়টি সঠিকভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।
উত্তর : গায়েব বলা হয় প্রত্যেক ওই বস্তুকে, যা পঞ্চন্দ্রীয় দ্বারা সরাসরি উপলব্ধি করা যায় না। আর ইলমে গায়েব বলা হয় কোন মাধ্যম ব্যবহার করা ব্যতিরেকে তাৎক্ষণিকভাবে নির্ভুলভাবে কোনো বিষয় জানা। এ ইলম একমাত্র মহান আল্লাহরই রয়েছে। অন্য কোনো মাখলূক ইলমে গায়েবের অধিকারী নয়। সুতরাং আলট্রাস্নোগ্রামে বা অন্য কোনো পরীক্ষার মাধ্যমে গর্ভাশয়ে ছেলে না মেয়ে, জেনে নেওয়া গায়েব জানার আওতায় পড়ে না। কেননা তা মাধ্যম ব্যবহার করে জানা হয়েছে। অতএব উক্ত আয়াতে কারীমার অর্থ হলো, মহান আল্লাহ পাক গর্ভাশয়ে কী আছে, কোনো মাধ্যম অবলম্বন করা ছাড়া সরাসরি নির্ভুলভাবে জানেন, যা অন্য কোনো মাখলূকের ক্ষমতায় নেই। এ ছাড়া শুধু গর্ভে ছেলে না মেয়ে তা-ই জানার কথা বলেননি, বরং এতে ছেলে না মেয়ে, ভালো না খারাপ, সৌভাগ্যবান না দুর্ভাগা, জান্নাতী না জাহান্নামী ইত্যাদি সকল অবস্থাই উদ্দেশ্য। (১৪/৮৪২/৫৮৩৮)
(বুখারি, হাদিস : 318, আহকামুল কোরআন : 3/517, আহকামুল কুরআন : 3/275, তাফসিরে রুহুল মাআনি : 11/141, মাওয়াহিবুর রহমান : 6/108