কাদিয়ানী, ইহুদী-নাসারা, কাফের-মুশরিক-নাস্তিকদের মধ্যে পার্থক্য
প্রশ্ন :
১. ক. কাদিয়ানী এবং ইহুদী-নাসারাদের মাঝে পার্থক্য কী?
খ. কাদিয়ানী এবং কাফের-মুশরিকদের মাঝে পার্থক্য কী?
গ. কাদিয়ানী এবং নাস্তিক-মুরতাদদের মাঝে পার্থক্য কী?
ঘ. কাদিয়ানী এবং যিন্দীকের মাঝে পার্থক্য কী?
২. যদি কোনো মুসলমানের আত্মীয় কাদিয়ানী হয়ে যায় এবং উক্ত মুসলমান ওই কাদিয়ানীর বাড়িতে আসা-যাওয়া এবং খাওয়া-দাওয়া করে তাহলে উক্ত মুসলমান সম্পর্কে শরয়ী বিধান কী?
৩. দ্বীনি দাওয়াত দেওয়ার উদ্দেশ্যে কাদিয়ানীর বাড়িতে আসা-যাওয়া, খাওয়া-দাওয়া করা জায়েয আছে কি না?
৪. যেকোনো ক্ষেত্রে কাদিয়ানীর সহযোগিতা করা জায়েয আছে কি না?
৫. কাদিয়ানীকে দ্বীনি দাওয়াত দেওয়ার সুযোগ আছে কি না? উল্লিখিত প্রশ্নসমূহের দলিলসহ জবাব দিতে হুজুরের একান্ত মর্জি কামনা করছি।
উত্তর : ১. হযরত মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর আনীত দ্বীন ইসলামকে অস্বীকারকারী সবাই কাফের, আল্লাহ তা’আলার দুশমন চির জাহান্নামী। মূল পরিণতির বিচারে সবাই এক ও অভিন্ন। তবে কর্ম ও আক্বীদায় এদের পরস্পর পার্থক্য থাকায় নাম ও কিছু হুকুম-আহকামে পার্থক্য করা হয় মাত্র। এদের মধ্যে যারা মুসা (আ.)-এর অনুসারী বলে দাবি করে তাদেরকে ইহুদী, যারা ঈসা (আ.)-এর অনুসারী হওয়ার দাবি করে তাদেরকে খ্রিস্টান, যারা দ্বীনের মৌলিক বিষয়ের অপব্যাখ্যা করে তাদেরকে যিন্দীক, যারা মূর্তি প্রতিকৃতি ও অন্যান্য মাখলুকের পূজাঅর্চনা করে তাদেরকে মুশরিক, আর যারা আল্লাহর অস্তিত্বকে সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করে তাদেরকে নাস্তিক বলা হয়। কাদিয়ানীরা ইসলামের অপব্যাখ্যা করে মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সর্বশেষ নবী হওয়াকে অস্বীকার করে এবং মিস্টার গোলাম কাদিয়ানীকে নবী হিসেবে মান্য করে এজন্য তারা কাফের, যিন্দীক। কাফেরদের মধ্যে ইসলামের জন্য এরাই সবচেয়ে বেশি ভয়ংকর। (৮/৫৭১)
فیض الباری (ربانی بکڈپو) ٤/ ٤٧۲ : والزنادیق قیل ھم الذین یتعبدون بالزند والقاف ملحق فی المعربات : قلت والزنادیق من یحرف فی معانی الالفاظ مع ابقاء الفاظ الاسلام کھذا اللعین فی القادیان، یدعی انه یؤمن بختم النبوۃ ثم یخترع له معنی من عندہ یصلح له بعدہ الختم، دلیلا علی فتح باب النبوۃ، فھذا ھو الزندقة حقا، ای التغییر فی المصادیق، وتبدیل المعانی علی خلاف ما عرفت عند اھل الشرع، وصرفھا الی اھوائه مع ابقاء اللفظ علی ظاھرہ، والعیاذ باللہ.
الفقه الإسلامی وأدلته (دار الفکر) ٦/ ۱۷۲ : الردۃ الرجوع عن دین الاسلام الی الکفر سواء بالنیة او الفعل المکفر او القول وسواء قاله استھزاء اوعنادا اواعتقادا.
فتاوی محمودیہ (زکریا بکڈپو) ۱/ ۱۱۷ : کافر تو وہ بھی ہوتا ہے جو ضروریات دین نص قطعی وغیرہ کا انکار کرے، مگر اسے مشرک نہیں کہتے، بلکہ مشرک اسے کہتے ہیں جو اللہ تعالی کے ساتھ کسی کو شریک کرے خواہ ذات میں خواہ صفات وافعال وغیرہ میں۔
فتاوی رحیمیہ (دار الاشاعت کراچی) ۷/ ۳۶ : غلام احمد قادیانی قطعی طور پر اسلام سے خارج اور اس کےمتبعین بھی جو اس کی نبوت کوتسلیم کرتے ہیں یا دعوٰی نبوت کے باوجود اسے دائرۂ اسلام میں سمجھتے ہیں وہ لوگ بھی قطعی طور پر کافر مرتد اور خارج از اسلام ہیں۔
২. যে ব্যক্তি কাদিয়ানীদের আক্বীদা সম্পর্কে অবগত হওয়ার পরও তাদেরকে অন্তর থেকে ভালোবাসে এবং মুসলমান মনে করে তার সাথে উঠাবসা ও খাওয়া-দাওয়া করে সে ব্যক্তিও মুসলমানের অন্তর্ভুক্ত নয় এবং নিজেকে মুসলমান দাবি করার অধিকার রাখে না। আর যদি কাফের মনে করে আসা-যাওয়া বা খাওয়া-দাওয়া করে সেও গোনাহগার এবং মারাত্মক অপরাধী। সুতরাং এ রকম ব্যক্তির জন্য অতি সত্ত্বর তাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা আবশ্যক।
سورۃ الممتحنة الآیة ۱ : ﴿یا ایھا الذین اٰمنوا لا تتخذوا عدوی وعدوکم اولیاء ﴾
الفتاوی الھندیة (مکتبة زکریا) ۵/ ۳٤۷ : ولم یذکر محمد رحمه اللہ تعالی الاکل مع المجوسی ومع غیرہ من اھل الشرك انه ھل یحل ام لا وحکی عن الحاکم الامام عبد الرحمن الکاتب انه ان ابتلی به المسلم مرۃ او مرتین فلا بأس به واما الدوام علیه فیکرہৃ ৃ ولا یأکل معه حال مایظھر الکفر والشرك ۔
৩. নিজের ঈমান-আক্বীদার হেফাজতের সাথে সাথে তাদের হেদায়াতের প্রবল সম্ভাবনা থাকলে এবং তাদের আচার-আচরণে কোনো প্রকারের বিভ্রান্তি সৃষ্টি না হওয়ার শর্তে তাদের নিকট দ্বীনি দাওয়াত নিয়ে যাতায়াত করা যাবে, অন্যথায় নয়।
سورة الأنعام الآیة ٦۸ : ﴿فَلَا تَقْعُدْ بَعْدَ الذِّكْرَى مَعَ الْقَوْمِ الظَّالِمِينَ﴾
سورة ھود الآیة ۱۱۳ : ﴿وَلَا تَرْكَنُوا إِلَى الَّذِينَ ظَلَمُوا فَتَمَسَّكُمُ النَّارُ﴾
خیر الفتاوی(زکریا بکڈپو) ۱/ ۳۸۷ : اگر مرزائیوں کے ساتھ نشست وبرخاست کھانا پینا آمد رفت میل جول دلی محبت اور دوستی کی بناء پر ہو تو ناجائز اور حرام ہے، اگر کسی دینی و شرعی غرض کے تحت ہو تو جائز ہے.
৪. কাদিয়ানীরা সাধারণ কাফেরের চেয়েও নিকৃষ্ট হওয়ায় তারা শুধু কাফেরই নয় বরং তারা যিন্দীকও। সুতরাং তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া এবং সাহায্য-সহযোগিতা করার অনুমতি নেই। তবে অসুস্থ অবস্থায় সেবার দ্বারা মুগ্ধ হয়ে তাওবা করে পুনরায় ইসলাম কবুল করার প্রবল আশাবাদী হলে তাদের সেবা করা যেতে পারে।
الفتاوی الھندیة (مکتبة زکریا) ۵/۳٤۸ : ولا بأس بعیادۃ الیھودی والنصرانی .
خیر الفتاوی (زکریا بکڈپو) ۱/ ۳۸۷ : واضح رہے کہ موالات یعنی دلی محبت ومودت کسی غیر مسلم سے کسی بھی حال میں قطعا جائز نہیں لقولہ تعالی یا ایھا الذین اٰمنوا لا تتخذوا عدوی وعدوکم اولیاء الآیة البتہ مواسات یعنی ہمدردی، خیرخواہی، نفع رسانی کی اجازت ہے لیکن جو کفار بر سر پیکار ہوں ان کے ساتھ اس کی بھی اجازت نہیں.
فتاوی محمودیہ (ادارۂ صدیق) ۲ / ۱۳۱ : مرزائی صرف کافر ہی نہیں بلکہ مرتد ہیں جو معاملہ دیگر کفار کیساتھ کیا جاتا ہے مرتد کے ساتھ شرعا نہیں کیا جاتا، اس لئے مرتد کے ساتھ کوئی ہمدردی نہیں چاہئے البتہ اگر یہ توقع ہو کہ وہ خوش اخلاقی اور تیمارداری سے متأثر ہو کر ارتداد سے تائب ہوجائیگا اور اسلام قبول کرلیگا تو پھر یہ تیمارداری مستقل تبلیغ کا حکم رکھتی ہے، بشرطیکہ نیت یہی ہو.
৬. কাদিয়ানীকে দ্বীনি দাওয়াত দেওয়ার সুযোগ অবশ্যই রয়েছে। তবে তা ওয়াজিবের পর্যায়ে নয়, বরং মুস্তাহাব।
الدر المختار مع الرد (ایچ ایم سعید) ٤/۲۲۵ : (من ارتد عرض) الحاكم (عليه الإسلام استحبابا) على المذهب لبلوغه الدعوة ۔
البحر الرائق (ایچ ایم سعید) ۵ /۱۲۵ : قوله یعرض الإسلام علی المرتد ای یعرضه الامام والقاضی وھو مروی عن عمر ؓ لان رجاء العود إلی الإسلام ثابت لاحتمال أن الردۃ کانت باعتراض شبھة لم یبین صفته وظاھر المذھب استحبابه فقط ولا یجب لان الدعوۃ قد بلغته وعرض الإسلام ھو الدعوۃ إلیه ودعوۃ من بلغته الدعوی غیر واجبة۔
الفتاوی الھندیة (مکتبة زکریا) ۲/ ۲۵۳ : إذا ارتد المسلم عن الإسلام والعیاذ باللہ عرض علیه الاسلام فان کانت له شبھة ابداھا کشفت الا ان العرض علی ما قالوا غیر واجب بل مستحب کذا فی فتح القدیر.