ঈসালে সাওয়াবের বিনিময় নেওয়া
প্রশ্ন : এ প্রথা প্রচলিত যে ঈসালে সাওয়াবের জন্য আলেমদেরকে দাওয়াত খাওয়ানো হয় এবং শেষে দু’আ করার পর টাকা হাদিয়া দেওয়া হয়। জনৈক আলেম বলেন, ঈসালে সাওয়াবের বিনিময় জায়েয নেই। তাই ঈসালে সাওয়াবের জন্য খানা খাওয়ালে দু’আ করা যাবে না। আর দু’আ করলে খানা খাওয়ানো যাবে না। কারণ তা বিনিময় হয়ে যাবে। তবে তিনি জায়েযের একটি পদ্ধতি বর্ণনা করেছেন যে ঈসালে সাওয়াবের খানার দাওয়াতদাতা ব্যক্তি দুনিয়াবী কোনো উদ্দেশ্যে আলেমদেরকে দাওয়াত দেবে, আলেমগণ দুনিয়াবী দু’আর সাথে সাথে ঈসালে সাওয়াবের দু’আ করে দেবেন। তখন দাওয়াত খাওয়ানো ও টাকা দেওয়া উভয়টিই জায়েয হবে। জানার বিষয় হলো, উক্ত আলেমের এ বক্তব্য সঠিক কি না?
উত্তর : শরীয়তের দৃষ্টিতে সর্বপ্রকারের আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া একাকী বা যৌথভাবে যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে ঈসালে সাওয়াব করার অনুমতি আছে। তবে ঈসালে সাওয়াবের উদ্দেশ্যে দিন-তারিখ ধার্র্য করে দাওয়াতের অনুষ্ঠান করা এবং ঈসালে সাওয়াবের বিনিময় হিসেবে টাকা নেওয়া নাজায়েয। আর যেখানে ঈসালে সাওয়াবের পর খানা খাওয়ানোর প্রথা আছে, সেখানে খানা বিনিময়ের অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় তাও নাজায়েয বলে বিবেচিত হবে। তবে ঈসালে সাওয়াবের জন্য কোনো গরিব ব্যক্তিকে খানা খাওয়ানোর সাথে সাথে টাকা-পয়সাও দিতে পারবে। আর আলেমদেরকে দুনিয়াবী কোনো উদ্দেশ্য বলে দাওয়াত দিলেও তার আসল উদ্দেশ্য ঈসালে সাওয়াব হওয়ার কারণে আলেমগণ দুনিয়াবী দু’আর সাথে সাথে কিছু আয়াত, দরূদ শরীফ, তাসবীহ-তাহলীল ইত্যাদি পড়ে ঈসালে সাওয়াবের জন্য দু’আ করলে এর বিনিময় হিসেবে খানা খাওয়া এবং টাকা নেওয়া কোনোটিই জায়েয হবে না। তবে তাসবীহ-তাহলীল, তেলাওয়াত দ্বারা যেমন ঈসালে সাওয়াব করা যায়, অনুরূপ শুধুমাত্র খানা খাইয়েও ঈসালে সাওয়াব করা যায়। সুতরাং উলামায়ে কেরামকে দাওয়াত করে খাওয়াতে ইচ্ছে করলে কোনো কিছুর বিনিময় ছাড়া শুধুমাত্র খানা খাইয়ে এবং টাকা হাদিয়া দিয়েও ঈসালে সাওয়াব করা যায়। তবে শর্ত হলো, আনুষ্ঠানিকতার রূপ না দেওয়া। (১৯/৪১/৭৯৯০)